,

কুড়িগ্রামে সরকারি গুদামে যাচ্ছে ফড়িয়াদের ধান

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের উলিপুরে কৃষকদের কাছ থেকে ধান না কিনে ট্রলিতে করে সরকারি গুদামে ঢোকানো হচ্ছে মধ্যস্বত্বভোগী ফড়িয়াদের ধান। ফলে স্থানীয় প্রভাবশালী ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অনিয়মের কারণে সরকারের মহৎ পরিকল্পনা ভেস্তে যাচ্ছে।

রবিবার (১৯ জানুয়ারি) উলিপুর গুদামে ট্রলি-ট্রলি বোঝাই ধান গুদামে ঢোকানোর দৃশ্য সাংবাদিকদের নজরে আসে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরকার নির্ধারিত মূল্যে কৃষক যেন ন্যায্য দাম পান সে লক্ষ্যে সারা দেশের মতো উলিপুরেও খাদ্য অধিদপ্তর ইউনিয়ন পর্যায়ে গিয়ে লটারির ব্যবস্থা করলেও এতে কৃষকের ভাগ্যের চাকা ঘুরছে না। লটারিতে বিজয়ী কৃষকদের কাছ থেকে এক টন করে ধান ক্রয় করা হবে। কিন্তু কৃষকের লটারির টিকিট এক থেকে দেড় হাজার টাকায় কিনে নিচ্ছেন প্রভাবশালী মহলের আর্শিবাদপুষ্ট ফড়িয়া ব্যবসায়ীরা। এতে সহযোগিতা করছেন খাদ্য বিভাগের দুর্নীতি পরায়ণ কর্মকর্তারা। ফলে সরকারের মহৎ উদ্দেশ্য ব্যাহত হচ্ছে।

উপজেলা খাদ্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, সারা দেশে ২০ নভেম্বর থেকে আমন ধান সংগ্রহ শুরু হলেও এ উপজেলায় তা শুরু হয় ১৯ ডিসেম্বর থেকে। উপজেলায় সরকারিভাবে আমন ধান ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ হাজার ৫৬৪ মেট্রিক টন। এর বিপরীতে এখন পর্যন্ত ৩৯৯ টন ধান সংগ্রহ করা হয়েছে।

খাদ্য গুদামের একটি সূত্রে জানা গেছে, প্রভাবশালী মহলের আর্শিবাদপুষ্ট ও গুদাম কর্মকর্তাদের যোগসাজশে মধ্যস্বত্বভোগী ব্যবসায়ীরা পাশ্ববর্তী উপজেলা থেকে ট্রলি বোঝাই ধান এনে গুদামে ঢোকাচ্ছেন।

রবিবার বিকালে উলিপুর খাদ্য গুদামে গিয়ে দেখা যায়, ৮-১০টি ট্রলিতে করে ধান গুদামে ঢোকাতে দেখা যায়। এ সময় সেখানে কোনো কৃষককে দেখতে পাওয়া যায়নি। ওই সময় সাংবাদিক দেখে মধ্যস্বত্বভোগী ব্যবসায়ীরা বিভিন্নভাবে অনুরোধ করে বুঝানোর চেষ্টা করে, এ ধরনের কাজ আর করবেন না। সেখানে উপস্থিত কয়েকজন ব্যবসায়ী এ ঘটনা গণমাধ্যমে প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ করেন।

খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা আমজাদ হোসেনের কাছে গুদামে ৮-১০টি ট্রলি বোঝাই ধানের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রথমে তিনি বলেন, বিষয়টি আমি জানি না। খোঁজ নিয়ে জানাব। পরবর্তীতে তিনি মোবাইল ফোনে জানান, ঘটনার সত্যতা পেয়ে ধান বোঝাই ট্রলিগুলো গুদাম থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা হেমন্ত কুমার বর্মনের মুঠোফোনে বার বার ফোন দেওয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

জেলা খাদ্য সংগ্রহ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আব্দুল কাদের বলেন, বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এই বিভাগের আরও খবর